রাজধানীর রামপুরার হাজীপাড়া এলাকায় ঝিলের ওপর মাচা বানিয়ে তৈরি করা একটি টিনশেড দোতলা বাড়ি দেবে গিয়ে অন্তত ১৩ জনের মৃত্যু হয়েছে।
রামপুরা থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. আলমগীর হোসেন জানান, বুধবার বিকাল সাড়ে ৩টার দিকে ঝিলপাড় বউবাজার এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে।
স্থানীয়দের সহযোগিতা নিয়ে উদ্ধার কাজে থাকা ফায়ার ব্রিগেড সদস্যরা জীবিত অবস্থায় বেশ কয়েকজনকে বের করে হাসপাতালে পাঠিয়েছেন। তবে ভেতরে আরও অনেকে আটকা পড়ে থাকতে পারেন বলে আশঙ্কা করছে পুলিশ।
রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা হতাহতের এ ঘটনায় শোক প্রকাশ করেছেন এবং শোকসন্তপ্ত পরিবারের সদস্যদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানিয়েছেন।ঢাকার জেলা প্রশাসক তোফাজ্জল হোসেন মিয়া জানিয়েছেন, নিহতদের দাফনের জন্য ২০ হাজার ও আহতদের চিকিৎসার জন্য ৫ হাজার টাকা করে দেওয়া হবে। এছাড়া ক্ষতিগ্রস্ত প্রতিটি পরিবারের জন্য বৃহস্পতিবার পর্যন্ত খাবারের ব্যবস্থা করা হবে।
এছাড়া উদ্ধার তৎপারতা ও সার্বিক পরিস্থিতি তদারকের জন্য ঘটনাস্থলের পাশে একজন ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে একটি নিয়ন্ত্রণ কক্ষ খোলা হয়েছে বলে জানান তিনি।
পরিদর্শক আলমগীর জানান, হাজীপাড়া নতুন রাস্তার বউ বাজার ও চৌধুরীপাড়ায় মাটির মসজিদ এলাকার মাঝে ওই এলাকা ঝিলপাড় বেগের বাড়ি হিসাবে পরিচিত। ঝিলের কাদা পানির ওপর মাচা করে টিন দিয়ে বানানো ওই দোতলা বাড়িতে যেতে হতো বিশ গজ দীর্ঘ বাঁশের সাঁকো দিয়ে।
“দোতলা ওই টিনশেডে মোট ২২টি ঘরে লোকজন থাকত। দুপুরের পরপর হঠাৎ খুঁটিসহ নিচতলার ঘরগুলো কাদাপানিতে দেবে যায়।”
খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের চারটি ইউনিট ঘটনাস্থলে গিয়ে উদ্ধার কাজ শুরু করে বলে নিয়ন্ত্রণ কক্ষের ওসি মো. এনায়েত হোসেন জানান।
ঘটনাস্থল থেকে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম প্রতিবেদক কাজী মোবারক হোসেন জানান, ফায়ার সার্ভিসের তিনজন ডুবুরিও উদ্ধার কাজে যোগ দিয়েছেন।
উদ্ধারকর্মীরা প্রথমে কাদাপানির ওপরে থাকা খুঁটি কেটে টিন সরানোর চেষ্টা করেন। পরে ক্রেইনের মাধ্যমে হুক লাগিয়ে টেনে উপরের কাঠামো সরানোর চেষ্টা করা হয় বলে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের আলোকচিত্রী আসিফ মাহমুদ অভি জানান।
রামপুরা থানার পরিদর্শক আলমগীর বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান, ফায়ার সার্ভিস কর্মীরা মোট ১৩ জনের লাশ উদ্ধার করেছেন।
এটুজেড নিউজ বিডি ডটকমকে নাসরিন জানান, দুর্ঘটনার সময় ওই বাড়িতে অন্তত ৪০ জন ছিলেন। তাদের অর্ধেকেরই এখনো খোঁজ মেলেনি।
গার্মেন্টকর্মী সৈয়দ ইব্রাহীম আলী তার শ্বশুর-শাশুড়ি, স্ত্রী ও তিন শ্যালকের সঙ্গে ওই বাড়ির দোতলায় থাকতেন। ওই বাড়ির বাসিন্দাদের মধ্যে অনেকেই বিভিন্ন পোশাক কারখানায় কাজ করেন।
“ঘটনা ঘটছে দুপুরে, খেয়ে দেয়ে অনেকে কাজে যাওয়ার পর। না হলে আরও বহু লোক আজ মারা যেত।”
স্থানীয় বাসিন্দা জাহাঙ্গীর আলম জানান, মনির মিয়া নামে একজন বছর দুই আগে ওই টিনের ঘর বানিয়ে ভাড়া দেন। তিনিই বাসিন্দাদের কাছ থেকে প্রতিটি ঘরের জন্য চার থেকে পাঁচ হাজার টাকা ভাড়া আদায় করতেন।
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন